(১৮) প্রশ্নঃ তাস, দাবা, কেরাম বোর্ড, লুডু খেলা শরী‘আতের দৃষ্টিতে কেমন অপরাধ? এর শাস্তি কি?
(১৮) উত্তরঃ খেলা-ধুলা মানুষের জন্মগত স্বভাব। এর উদ্দেশ্য সাময়িক শরীর চর্চা।
যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। বয়স ভেদে মানুষের শরীর চর্চার ধরনের
পরিবর্তন হয়। কিন্তু সাময়িক শরীর চর্চার বদলে যদি তা কেবল সময়ের অপচয়
হয়, স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হয়, যদি ঐ ব্যক্তি দ্বীন থেকে গাফেল হয়,
দায়িত্ব বিস্মৃত হয় বা তাতে জুয়া মিশ্রিত হয়, তখন ঐ খেলা হারামে পরিণত
হয়। একদিন দু’জন আনছার ছাহাবী তীর নিক্ষেপ প্রতিযোগিতা
করছিলেন।
হঠাৎ একজন বসে পড়লেন। তখন অপরজন বিস্মিত হয়ে বললেন, কি
ব্যাপার। কষ্ট হয়ে গেল নাকি? জবাবে তিনি বললেন, ‘আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে
বলতে শুনেছি যে, প্রত্যেক বস্ত্ত যা আল্লাহর স্মরণকে ভুলিয়ে দেয়, সেটাই
অনর্থক (لَهْو) … (নাসাঈ, ছহীহাহ হা/৩১৫)। এতে বুঝা যায় যে, বৈধ খেলাও যদি
আল্লাহর স্মরণকে ভুলিয়ে দেয়, তবে সেটাও জায়েয হবে না। ইমাম বুখারী
(রহঃ) অনুচ্ছেদ রচনা করেছেন, ‘প্রত্যেক খেলা-ধুলা (لَهْو) বাতিল, যদি তা
আল্লাহর আনুগত্য থেকে উদাসীন করে দেয়’ (ফাৎহুলবারী ‘অনুমতি গ্রহণ’ অধ্যায়
৭৯, অনুচ্ছেদ ৫২; ১১/৯৪ পৃঃ)। আল্লাহ বলেন, লোকদের মধ্যে এমন কিছু লোক
আছে, যারা অজ্ঞতাবশে বাজে কথা খরিদ করে মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুৎ
করার জন্য এবং সত্য পথকে তারা বিদ্রুপ করে, তাদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাকর
শাস্তি’। ‘যখন তার নিকট আমাদের আয়াত সমূহ পাঠ করা হয়, তখন সে দম্ভভরে মুখ
ফিরিয়ে নেয়, যেন সে এটা শুনতেই পায়নি। যেন তার দুই কানে বধিরতা আছে।
অতএব তুমি তাকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সুসংবাদ দাও’ (লোকমান ৬-৭)।প্রশ্নে বর্ণিত খেলাসমূহে উপরে বর্ণিত ক্ষতিকর বিষয়সমূহ থাকায় তা অবশ্যই ‘বাতিল’ বলে গণ্য হবে। তাদেরকে উপদেশের মাধ্যমে ফেরাতে হবে। নইলে পিতা-মাতা, অভিভাবক বা সমাজ নেতাগণ অনুশাসন মূলক শাস্তি দিবেন। শারঈ দন্ড যা এক্ষেত্রে ১০ বেত্রাঘাতের উপরে নয়, তা কেবল সরকারী আদালত দিতে পারে (ফিক্বহুস সুন্নাহ ৩/৬৫)।
উপরে যে খেলা গুলোর কথা বলা হোলো সে খেলাগুলো খেললে বা খেলার আহ্বান করলে সোয়া কেজি চাল কাফফারা দিতে হবে। তা নাহলে গুনাগার হবে।
No comments:
Post a Comment