বাংলাদেশ যাকাত ফাউন্ডেশন
যাকাতের নিসাব ও বন্টনের খাত
যাকাতের নিসাবঃকোন নির্দিষ্ট বছরে অত্যাবশ্যকীয় ব্যয় নির্বাহের পর বৈধভাবে অর্জিত ৭.৫০ তোলা স্বর্ণ বা ৫২.৫০ তোলা রৌপ্য বা সমমূল্যের অর্থ সম্পদের মালিক হলে তার উপর শতকরা ২.৫০ ভাগ যাকাত আদায় করা ফরয।
যাকাতযোগ্য সম্পত্তির বিবরণ, তার নিসাব বা সর্বনিমণ পরিমাণ ও যাকাত আদায়ের হার সংক্রান্ত চার্ট নিম্নরূপঃ
বি.দ্র.: নিসাব পরিমাণ মালের মালিক হওয়ার দিন থেকে এক বছর পুর্তির পর যাকাত ফরয হয়।
যাকাত বন্টনের নির্ধারিত ৮টি খাতের বিবরণ:
ক্রম | যাকাতযোগ্য সম্পত্তির বিবরণ | যাকাতের নিসাব (ন্যূনতম যে পরিমাণ ধন-সম্পদ থাকলে যাকাত আদায় করা ফরজ) |
যাকাত পরিশোধের হার | |
১ | ২ | ৩ | ৪ | |
১. | হাতে রক্ষিত অথবা ব্যাংকে নগদ গচ্ছিত অর্থ, শেয়ার সার্টিফিকেট, প্রাইজবন্ড ও সার্টিফিকেট সমূহ। | ৫২.৫ তোলা রূপা বা তার সমপরিমাণ বাজার মূল্য। | মোট অর্থের শতকরা ২.৫%। | |
২. | স্বর্ণ/রৌপ্য, মূল্যবান ধাতু ও স্বর্ণ বা রৌপ্যের অলংকার। | ৭.৫ তোলা স্বর্ণ কিংবা ৫২.৫ তোলা রৌপ্য অথবা সমপরিমাণ অর্থ। | আদায়কালীন বাজার মূল্য অনুযায়ী মোট অর্থের শতকরা ২.৫%। | |
৩. | বাণিজ্যিক সম্পদ ও শিল্পজাত ব্যবসায় প্রতিশ্রুত লভ্যাংশের ভিত্তিতে প্রদত্ত অর্থ। | ৫২.৫ তোলা রূপার মূল্য। | আদায়কালীন বাজার মূল্যের শতকরা ২.৫%। | |
৪. | উৎপাদিত কৃষিজাত ফসল। | - | বৃষ্টির পানিতে উৎপাদিত ফসলের উশর ১/১০ অংশ, সেচে উৎপাদিত জমিরফসলের ১/২০ অংশ অথবা শস্যের বাজার মূল্যের সমপরিমাণ প্রতি মৌসুমে আদায়যোগ্য। | |
৫. | পশু সম্পদ (ক) ভেড়া বা ছাগল প্রভৃতি। |
১ থেকে ৩৯টি পর্যমত্ম | যাকাত প্রযোজ্য নয়। | |
৪০থেকে ১২০টি | ১টি ভেড়া/ছাগল | |||
১২১ থেকে ২০০টি | ২টি ভেড়া/ছাগল | |||
২০১ থেকে ৩০০টি | ৩টি ভেড়া/ছাগল | |||
এর অতিরিক্ত প্রতি ১০০টির যাকাত | ১টি করে ভেড়া/ছাগল | |||
(খ) গরম্ন, মহিষ ও অন্যান্য গবাদি পশু। | ১ থেকে ২৯টি পর্যমত্ম | যাকাত প্রযোজ্য নয়। | ||
৩০ থেকে ৩৯টি | এক বছর বয়সী ১টি বাছুর | |||
৬০টি এবং ততোধিক | প্রতি ৩০টির জন্য ১ বছর বয়সী এবং প্রতি ৪০টির জন্য ২ বছর বয়সী বাছুর। | |||
(গ) ব্যবসার উদ্দেশ্যে মৎস্য চাষ, হাঁস-মুরগী পালন এবং ব্যবসার উদ্দেশ্যে ক্রয়কৃত জমি, নির্মিত বাড়ী প্রভৃতির বাজার মূল্যের হিসাব হবে। | ৫২.৫ তোলা রূপার মূল্য। | তবে বাজার মূল্যের ২.৫% অর্থ। | ||
৬. | খণিজ দ্রব্য। | যে কোন পরিমাণ। | উত্তোলিত খণিজ দ্রব্যের শতকরা ২০ ভাগ। | |
৭. | প্রভিডেন্ট ফান্ডঃ সরকারী প্রতিষ্ঠানে বা যে সকল কর্পোরেশনে সরকারী নিয়মানুযায়ী প্রভিডেন্ট ফান্ড কর্তন করা হয়, উক্ত প্রভিডেন্ট ফান্ডের কর্তৃনকৃত টাকার উপর যাকাত ওয়াজিব হবে না। তবে এই টাকা গ্রহণ করার পর একবছর পূর্ণ হলে সম্পূর্ণ টাকার উপর যাকাত প্রদান করতে হবে। |
৫২.5 তোলা রূপার মূল্য। | শতকরা ২.৫ ভাগ। | |
৮. | কোন বেসরকারী প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির উদ্যোগে প্রভিডেন্ট ফান্ড গঠন করা হলে প্রতি বছর তার উপর যাকাত দিতে হবে। | ৫২.৫ তোলা রূপার মূল্য। | শতকরা ২.৫ ভাগ। | |
যাকাত বন্টনের খাত
যাকাতের সম্পদ সঠিকভাবে বন্টন করার উপর
অধিক গুরম্নত্ব দেয়া হয়েছে। এই কারণে আলস্নাহপাক নিজেই যাকাত ব্যয় বন্টনের
খাত নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। যাকাত কেবল নি:স্ব, অভাবগ্রস্থ ও
তৎসংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের জন্য, যাদের চিত্ত আকর্ষণ করা হয় তাদের জন্য, দাস
মুক্তির জন্য, ঋণগ্রস্থদের জন্য, আল্লাহর পথে সংগ্রামকারী ও মুসাফিরদের
জন্য। এটা আল্লাহর বিধান। আলস্নাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময় (আল কুরআন,
৯:৬০)। এ খাতের বাইরে অন্য কোন খাতে যাকাতের অর্থ ব্যয় করা যাবে না। নিম্নে
পবিত্র কুরআনে বর্ণিত উলেস্নখিত ৮টি খাতের বর্ণনা দেয়া হলো।যাকাত বন্টনের নির্ধারিত ৮টি খাতের বিবরণ:
প্রথম খাতঃ ফকীর- ফকীর হলো সেই ব্যক্তি যার নিসাব পরিমাণ সম্পদ নেই। যে ব্যক্তি রিক্তহস্ত, অভাব মেটানোর যোগ্য সম্পদ নেই, ভিক্ষুক হোক বা না হোক, এরাই ফকীর। যে সকল স্বল্প সামর্থ্যের দরিদ্র মুসলমান যথাসাধ্য চেষ্ট করা সত্ত্বেও বা দৈহিক অক্ষমতাহেতু প্রাত্যহিক ন্যায়সঙ্গত প্রয়োজনটুকু মেটাতে পারে না, তারাই ফকীর। কারও মতে যার কাছে একবেলা বা একদিনের খাবার আছে সে ফকীর। |
দ্বিতীয় খাতঃ মিসকীন- মিসকীন সেই ব্যক্তি যার কিছুই নেই, যার কাছে একবেলা খাবারও নেই। যে সব লোকের অবস্থা এমন খারাপ যে, পরের নিকট সওয়াল করতে বাধ্য হয়, নিজের পেটের আহারও যারা যোগাতে পারে না, তারা মিসকীন। মিসকীন হলো যার কিছুই নেই, সুতরাং যার কাছে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নিসাব পরিমাণ অর্থ সম্পদ নেই, তাকে যাকাত দেয়া যাবে এবং সেও নিতে পারবে। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে, ফকীর বা মিসকীন যাকেই যাকাত দেয়া হবে, সে যেন মুসলমান হয় এবং প্রয়োজনের অতিরিক্ত নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক না হয়। |
তৃতীয় খাতঃ আমেলীন- ইসলামী সরকারের পক্ষে লোকদের কাছ থেকে যাকাত, উসর প্রভৃতি আদায় করে বায়তুল মালে জমা প্রদান, সংরক্ষণ ও বন্টনের কার্যে নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গ। এদের পারিশ্রমিক যাকাতের খাত থেকেই আদায় করা যাবে। কুরআনে বর্ণিত আটটি খাতের মধ্যে এ একটি খাতই এমন, যেখানে সংগৃহীত যাকাতের অর্থ থেকেই পারিশ্রমিক দেয়া হয়। এ খাতের বৈশিষ্ট্য হলো এতে ফকীর বা মিসকীন হওয়া শর্ত নয়। পক্ষান্তরে, অবশিষ্ট ৫টি খাতে দরিদ্র ও অভাবগ্রস্থ দূরীকরণে যাকাত আদায় শর্ত। |
চতুর্থ খাতঃ মুআলস্নাফাতুল কুলুব (চিত্ত জয় করার জন্য)- নতুন মুসলিম যার ঈমান এখনও পরিপক্ক হয়নি অথবা ইসলাম গ্রহণ করতে ইচ্ছুক অমুসলিম। যাদের চিত্ত (দ্বীন ইসলামের প্রতি আকর্ষণ করে) আকর্ষণ ও উৎসাহিত করণ আবশ্যকীয় মনে করে যাকাত দান করা হয়, যাতে তাদের ঈমান পরিপক্ক হয়। এ খাতের আওতায় দুঃস্থ নওমুসলিম ব্যক্তিদের যাকাত প্রদানের ব্যাপারে ফকিহগণ অভিমত প্রদান করেছেন। |
পঞ্চম খাতঃ ক্রীতদাস/বন্দী মুক্তি- এ খাতে ক্রীতদাস-দাসী/বন্দী মুক্তির জন্য যাকাতের অর্থ ব্যয় করা যাবে। অন্যায়ভাবে কোন নিঃস্ব ও অসহায় ব্যক্তি বন্দী হলে তাকেও মুক্ত করার জন্য যাকাতের অর্থ ব্যয় করা যাবে। |
ষষ্ঠ খাতঃ ঋণগ্রস্থ- এ ধরণের ব্যক্তিকে তার ঋণ মুক্তির জন্য যাকাত দেয়ার শর্ত হচ্ছে- সেই ঋণগ্রস্থের কাছে ঋণ পরিশোধ পরিমাণ সম্পদ না থাকা। আবার কোন ইমাম এ শর্তারোপও করেছেন যে, সে ঋণ যেন কোন অবৈধ কাজের জন্য- যেমন মদ কিংবা না- জায়েয প্রথা অনুষ্ঠান ইত্যাদির জন্য ব্যয় না করে। |
সপ্তম খাতঃ আলস্নাহর পথে-
সম্বলহীন মুজাহিদের যুদ্ধাস্ত্র/সরঞ্জাম উপকরণ সংগ্রহ এবং নিঃস্ব ও অসহায়
গরীব দ্বীনি শিক্ষারত শিক্ষার্থীকে এ খাত থেকে যাকাত প্রদান করা যাবে। এ
ছাড়াও ইসলামের মাহাত্ম ও গৌরব প্রচার ও প্রসারের কাজে নিয়োজিত থাকার কারণে
যারা জীবিকা অর্জনের অবসর পান না এবং যে আলিমগণ দ্বীনি শিক্ষাদানের কাজে
ব্যাপৃত থাকায় জীবিকা অর্জনের অবসর পান না। তারা অসচ্ছল হলে সর্বসম্মতভাবে
তাদেরকেও যাকাত দেয়া যাবে। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনের সূরা বাকারায় বর্ণিত আছে যে, ‘‘যাকাত এই সমসত্ম লোকের জন্য যারা আলস্নাহর পথে এমনভাবে ব্যাপৃত যে, দেশময় ঘুরাফেরা করতে পারে না, যাচঞা না করার জন্য অজ্ঞ লোকেরা তাদেরকে অভাবমুক্ত বলে মনে করে। |
অষ্টম খাতঃ অসহায় মুসাফির- যে সমসত্ম মুসাফির অর্থ কষ্টে নিপতিত তাদেরকে মৌলিক প্রয়োজন পুরণ হওয়ার মত এবং বাড়ী ফিরে আসতে পারে এমন পরিমাণ অর্থ যাকাত থেকে প্রদান করা যায়। |
বাংলাদেশ যাকাত ফাউন্ডেশনের অঙ্গীকার
আমাদের (যাকাত বোর্ডের) সকল কার্যক্রম ইসলামী শরীয়াহ মুতাবিক পরিচালিত হয়। পবিত্র কুরআনে সূরা আত-তাওবা’য় নির্ধারিত ৮টি খাতে যাকাতের অর্থ ব্যয় করার জন্য বলা হয়েচছ। যাকাত বোর্ড বাস্তবতার আলোকে বিভিন্ন কার্যক্রম/কর্মসূচি গ্রহণের মাধ্যমে যাকাতের যাকাতের অর্থ নিঃস্ব ও অসহায়দের স্থায়ীভাবে স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে কাজ করা যাচ্ছে।
বাংলাদেশ যাকাত ফাউন্ডেশন এর যাকাত ফান্ডের
সংগৃহীত অর্থ দ্বারা পরিচালিত কার্যক্রম সমূহ নিম্নরূপ:
১. পুর্নবাসনের উদ্দেশ্যে সেলাই প্রশিক্ষণ সমাপ্তকারী দু:স্থ মহিলাদের সেলাই মেশিন বিতরণ কার্যক্রম চালু করা হবে। সংগৃহীত অর্থ দ্বারা পরিচালিত কার্যক্রম সমূহ নিম্নরূপ:
২. সেলাই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম: এ কার্যক্রমের আওতায় সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মাধ্যমে দু:স্থ মহিলাদের কর্মক্ষম করার ক্ষেত্রে সহয়তা প্রদান করা হবে।
৩. ইসলামের প্রচারে সহয়তা প্রদান করা হবে।
৪. বাংলাদেশ যাকাত ফাউন্ডেশন শিশু হাসপাতাল তৈরি করা: এ কাযক্রমের আওতায় শিশু হাসপাতাল পরিচালনার মাধ্যমে দু:স্থ শিশুদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হবে।
৫. প্রতিবন্ধী পুর্নবাসন: প্রতিবন্ধীদের আর্থিক সহয়তার মাধ্যমে পুনর্বাসন কর্মসূচীর আওতায় পুর্নবাসনের লক্ষ্যে সহয়তা করা হবে।
৬. দু:স্থ পুরুষদের কর্মসংস্থান কার্যক্রম: রিকসা/ভ্যানগাড়ী ক্ষুদ্র ব্যবসায় পুঁজি প্রদানের নিমিত্ত জেলা যাকাত কমিটির মাধ্যমে দু:স্থ পুরুষদের কর্মসংস্থানের জন্য সহয়তা করা হবে।
৭. যাকাত ভাতা: হাঁস মুরগী, গরু-ছাগল পালন, সেলাই মেশিন প্রদানের মাধ্যমে বিধবাসহ দু:স্থদের সমাজ জীবনে পুনর্বাসনের নিমিত্তে সহয়তা করা হবে।
৮. শিক্ষাবৃত্তি প্রদান (ছাত্র/ছাত্রী): দরিদ্র মেধাবী ছাত্র/ছাত্রীদেরকে শিক্ষাবৃত্তি প্রদানের মাধ্যমে সহয়তা করা হবে।
৯. নওমুসলিম স্বাবলম্বীকরণ কার্যক্রম: দু:স্থ নওমুসলিদের আর্থিক সাহায্য সহযোগিতা দানের মাধ্যমে পুনর্বাসনের নিমিত্তে সহয়তা করা হবে।
১০. দু:স্থ ও গরীব রোগীদের চিকিৎসা বাবদ আর্থিক সহয়তা কার্যক্রম দু:স্থ, অসহায় গরীব রোগীদের চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহের লক্ষ্যে আর্থিক সহয়তার মাধ্যমে সেবা প্রদান করা হবে।
১১. ৩টি পার্বত্য জেলায় নওমুসলিমদের আর্থিক সাহায্য: এ কার্যক্রমের আওতায় পার্বত্য জেলায় নওমুসলিমদেরকে আর্থিক সহয়তা প্রদান করা হবে।
১২. মঙ্গা/প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থদের ত্রাণ ও পুনর্বাসন: প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থদের ত্রাণ ও পুনর্বাসনে সহয়তা প্রদান করা হবে।
১৩. বৃক্ষরোপন/নার্সরী সহয়তা কার্যক্রম: দু:স্থ অসহায় গরীব ইমামগণের বৃক্ষরোপন/নার্সারী বাবদ সহয়তার মাধ্যমে পরিবেশ উন্নয়নসহ অর্থনৈতিকভাবে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে আর্থিক সাহায্য প্রদান করা হবে।
১৪. এছাড়া বাংলাদেশ যাকাত ফাউন্ডেশনের ৬৪টি জেলা কার্যালয়ের মাধ্যমে এ যাবৎ সংগৃহীত টাকার ৬০% টাকা প্রতিবনধী পুর্নবাসন, দু:স্থ পুরুষদের কর্মসংসত্মান কার্যক্রম, যাকাত বাতা, শিক্ষাবৃত্তি প্রদান, নওমুসলিম স্বাবলম্বীকরণ কার্যক্রম এবং দু:স্থ-গরীব রোগীদের চিকিৎসা বাবদ আর্থিক সহয়তা কার্যক্রম খাতে জেলা কার্যালয়ের মাধ্যমে প্রদান করা হয়েছে।
বাংলাদেশ যাকাত ফাউন্ডেশন
রংপুর, বাংলাদেশ
e-mail: @ gmail . com
Mobile: 01742344107
রংপুর, বাংলাদেশ
e-mail: @ gmail . com
Mobile: 01742344107
No comments:
Post a Comment