Friday, August 17, 2018

সুন্নাহর আলোকে ঈদুল আযহা ও কুরবানী (পর্ব ২)

সুন্নাহর আলোকে ঈদুল আযহা ও কুরবানী

ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর রহঃ
অধ্যাপক, আল-হাদীস বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া 
চেয়ারম্যান, আস-সুন্নাহ ট্রাস্ট
প্রিয় পাঠক, পবিত্র ঈদুল আযহা ও কুরবানী আমাদের দরজায় কড়া নাড়ছে। তাই আমরা ঈদুল আযহা ও কুরবানীর বিষয়ে আলোচনা শুরু করেছি। দুই পর্বের আলোচনার আজ দ্বিতীয় ও শেষ পর্ব।
কুরবানীর মূল বিষয় হলো উদ্দেশ্যের বিশুদ্ধতা। নিজের সম্পদের কিছু অংশ একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য বিলিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে কুরবানী করলেই তা প্রকৃত কুরবানী। আল্লাহ বলেন:

لَنْ يَنَالَ اللَّهَ لُحُومُهَا وَلا دِمَاؤُهَا وَلَكِنْ يَنَالُهُ التَّقْوَى مِنْكُمْ كَذَلِكَ سَخَّرَهَا لَكُمْ لِتُكَبِّرُوا اللَّهَ عَلَى مَا هَدَاكُمْ وَبَشِّرِ الْمُحْسِنِينَ
“এগুলির- অর্থাৎ কুবরানীকৃত পশুগুলির গোশত বা রক্ত আল্লাহর নিকট পৌঁছে না; বরং তোমাদের তাকওয়া তাঁর নিকট পৌঁছায়। এভাবেই তিনি এ সব পশুকে তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন, যাতে তোমরা আল্লাহর তাকবীর পাঠ করতে পার, এজন্য যে, তিনি তোমাদেরকে হেদায়াত করেছেন; সুতরাং তুমি সৎকর্মশীলদেরকে সুসংবাদ দাও।” সূরা হাজ্জ: ৩৭ আয়াত।
তাহলে মূল বিষয় হলো অন্তরের তাকওয়া, আল্লাহ ভীতি, আল্লাহর কাছে সাওয়াব পাওয়ার আবেগ, আল্লাহর অসন্তুষ্টি ও শাস্তি থেকে আত্মরক্ষার আগ্রহ। একমাত্র এরূপ সাওয়াবের আগ্রহ ও অসন্তুষ্টি থেকে রক্ষার আবেগ নিয়েই কুরবানী দিতে হবে। আর মনের এ আবেগ ও আগ্রহই আল্লাহ দেখেন এবং এর উপরেই পুরস্কার দেন। কুরবানী দেওয়ার পর গোশত কে কতটুকু খেল তা বড় কথা নয়।
আমরা নিজেরা ও পরিবার-পরিজন ও আত্মীয়স্বজন সকলেই কুরবানীর পশুর গোশত খাব। পশুটির গোশত সুন্দর হবে, মানুষ ভালভাবে খেতে পারবে ইত্যাদি সবই চিন্তা করতে হবে। কিন্তু গোশত খাওয়ার উদ্দেশ্যে কুরবানী দিলে কুরবানীই হবে না। মূল উদ্দেশ্য হবে, আমি আল্লাহর রেযামন্দি ও নৈকট্য লাভের জন্য আমার কষ্টের সম্পদ থেকে যথাসম্ভব বেশি মূল্যের ভাল একটি পশু কুরবানী করব। কুরবানীর পর এ থেকে আল্লাহর বান্দারা খাবেন। আল্লাহর বান্দা হিসেবে আমি ও আমার পরিজন কিছু খাব। আর যথাসাধ্য বেশি করে মানুষদের খাওয়াব। আল্লাহ বলেন:
لِيَشْهَدُوا مَنَافِعَ لَهُمْ وَيَذْكُرُوا اسْمَ اللَّهِ فِي أَيَّامٍ مَعْلُومَاتٍ عَلَى مَا رَزَقَهُمْ مِنْ بَهِيمَةِ الأَنْعَامِ فَكُلُوا مِنْهَا وَأَطْعِمُوا الْبَائِسَ الْفَقِيرَ
“যেন তারা নিজেদের কল্যাণের স্থানসমূহে হাযির হতে পারে এবং তিনি তাদেরকে চতুষ্পদ জন্তু থেকে যে রিযক দান করেছেন তার উপর নির্দিষ্ট দিনগুলিতে আল্লাহর নাম যিক্র করে। অতঃপর তোমরা তা থেকে খাও এবং দুস্থ-দরিদ্রদেরকে খেতে দাও।” সূরা হাজ্জ: ২৮ আয়াত।
তাহলে, দুস্থ-দরিদ্রদেরকে খাওয়ানো আগ্রহ ও উদ্দেশ্য কুরবানীর অবিচ্ছেদ্য অংশ। কুরবানীর গোশত তিনভাগ করে একভাগ পরিবারের, একভাগ আত্মীয়দের এবং একভাগ দরিদ্রদের প্রদানের রীতি আছে। এরূপ ভাগ করা একটি প্রাথমিক হিসাব মাত্র। যাদের সারা বৎসর গোশত কিনে খাওয়ার মত সচ্ছলতা আছে তারা চেষ্টা করবেন যথাসম্ভব বেশি পরিমান গোশত দরিদ্রদের মধ্যে বিতরণ করতে। আর যারা কিছুটা অসচ্ছল এবং সাধারণভাবে পরিবার ও সন্তানদের গোশত কিনে খাওয়াতে পারেন না, তারা প্রয়োজনে পরিবারের জন্য বেশি পরিমান রাখতে পারেন। তবে কুরবানীর আগে আমার পরিবার কি পরিমান গোশত পাবে, অথবা বাজার দর হিসেবে গোশত কিনতে হলে কত লাগত এবং কুরবানী দিয়ে আমার কি পরিমাণ সাশ্রয় হলো ইত্যাদি চিন্তা করে কুরবানী দিলে তা আর কুরবানী হবে না।
কুরবানীর গোশত ঘরে রেখে দীর্ঘদিন ধরে খাওয়া বৈধ। তবে ত্যাগের অনুভূতি যেন নষ্ট না হয়। আজকাল ফ্রীজ হওয়ার কারণে অনেকেই কুরবানীর গোশত রেখে দিয়ে বাজার খরচ বাচানোর চিন্তা করি। বস্তুত যথাসম্ভব বেশি পরিমাণ দান করতে এবং যথাসম্ভব বেশি দরিদ্রকে ঈদুল আযহার আনন্দে শরীক করতে চেষ্টা করতে হবে। এরপর কিছু রেখে দিলে অসুবিধা নেই।
কুরবানী দিতে হবে আল্লাহর নামে। আমরা বাংলায় বলি, অমুকের নামে কুরবানী। আমাদের উদ্দেশ্য ভাল হলেও কথাটি ভাল নয়। এক্ষেত্রে বলতে হবে, “অমুকের পক্ষ থেকে কুরবানী”। আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে কুরবানী বা জবাই করা শিরক এবং এভাবে জবাইকৃত পশুর গোশত খাওয়া হারাম। উপরের আয়াতে আমরা দেখেছি যে, কুরবানীর পশু জবাইয়ের সময় আল্লাহর নামের যিক্র করতে নির্দেশ দিয়েছেন আল্লাহ। অন্যত্র আল্লাহ বলেন:
وَلِكُلِّ أُمَّةٍ جَعَلْنَا مَنْسَكًا لِيَذْكُرُوا اسْمَ اللَّهِ عَلَى مَا رَزَقَهُمْ مِنْ بَهِيمَةِ الأَنْعَامِ
“প্রত্যেক জাতির জন্য আমি কুরবানীর নিয়ম করে দিয়েছি; এজন্য যে, আল্লাহ তাদেরকে যে সকল চতুষ্পদ জন্তু রিযক হিসেবে প্রদান করেছেন সেগুলির উপর তারা আল্লাহর নাম যিক্র করতে পারে।” সূরা হাজ্জ: ৩৪ আয়াত।
কুরবানীর ক্ষেত্রে মূল সুন্নাত হলো “বিসমিল্লাহ” বাক্যটি বলে আল্লাহর নাম যিক্র করা। বিভিন্ন হাদীস থেকে আমরা দেখি যে, রাসূলুল্লাহ  কখনো কখনো শুধু বিসমিল্লাহ বলেই কুরবানী করেছেন। এরপর তিনি কবুলিয়্যাতের দু‘আ করেছেন। সাধারণত তিনি “বিসমিল্লাহি ওয়া আল্লাহু আকবার” বলতেন। কখনো কখনো তিনি প্রথমে “ওয়াজ্জাহতু ওয়াজহিয়া লিল্লাযি ফাতারাস সামাওয়াতি ওয়াল আরদা হানীফাও ওয়ামা আনা মিনাল মুশরিকীন। ইন্না সালাতী ওয়া নুসুকী ওয়া মাহইয়ায়াইয়া ওয়া মামাতী লিল্লাহি রাব্বীল আলামীন। লা শারীকা লাহু ওয়া বি যালিকা উমিরতু ওয়া আনা আউয়ালুল মুসলিমীন” বলতেন। এরপর বলতেন: বিসমিল্লাহি ওয়া আল্লাহু আকবার। এরপর তিনি কবুলের দু‘আ করে বলতেন “আল্লাহুম্মা লাকা ওয়া মিনকা”, “আল্লাহুম্মা ‘আন মুহাম্মাাদিন ওয়া আলি মুহাম্মাদ”, অথবা “আল্লাহুম্মা তাকাব্বাল মিন মুহাম্মাাদিন ওয়া আলি মুহাম্মাাদিন ওয়া উম্মাতি মুহাম্মাদিন” “আল্লাহ আপনারই জন্য এবং আপনার পক্ষ থেকে।” “হে আল্লাহ, মুহাম্মাদ ও মুহাম্মাদের পরিবারের পক্ষ থেকে”, “হে আল্লাহ আপনি কবুল করুন এ কুবরানী মুহাম্মাদের পক্ষ থেকে, মুহাম্মাদের পরিবারের পক্ষ থেকে ও মুহাম্মাদের উম্মাতের পক্ষ থেকে।”
আমাদের ফকীহগণ উল্লেখ করেছেন যে, কবুলের দু‘আগুলি জবাইয়ের আগে বা পরে বলতে হবে, যেন, জবাইয়ের সময় আল্লাহ ছাড়া কারো নাম মুখে উচ্চারণ করা না হয়।
আমরা জানি, আল্লাহর নাম হলো “আল্লাহ”। ফকীহগণ লিখেছেন যে, আল্লাহর নাম নেওয়ার নিয়্যাতে শুধু “আল্লাহ”, “আল্লাহুম্মা”, “সুবহানাল্লাহ”, “আলহামদু লিল্লাহ” বা অন্য কোনোভাবে আল্লাহর নাম যিকর করলেই কুরবানী বা জবাই জায়েয হবে। যদি ফারসী, বাংলা বা অন্য কোনো অনারব ভাষাতে আল্লাহর নাম বা নাম সম্বলিত কোনো বাক্য যিক্র করে তাহলেও জবাই ও কুরবানী জায়েয হবে বলে হানাফী ফকীহগণ ফিকহের সকল কিতাবে উল্লেখ করেছেন।
প্রিয় পাঠক, এর অর্থ কী? ফকীহগণের এ সকল বক্তব্যের অর্থ কি এই যে, আমরা সকলেই “আল্লাহ”, “আল-হামদুল্লিাহ”, “প্রশংসা আল্লাহর”, “আল্লাহ মহান” ইত্যাদি বাক্য বলে কুরবানী করার রীতি চালু করব? এর অর্থ কি আমরা ইচ্ছাকৃতভাবে এভাবে কুরবানী কবর? না আমরা কুরবানীর সময় রাসূলুল্লাহ সা. কি কথা বলে আল্লাহর নামের যিক্র করতেন তা জেনে তাঁর হুবহু অনুসরণের চেষ্টা করব?
ফকীহদের এ কথার অর্থ হলো, এভাবে আল্লাহর নাম নিলে নূন্যতম নাম নেওয়া হবে এবং কুরবানী হালাল হয়ে যাবে। এর মানে এ নয় যে, আমরা ইচ্ছাকৃতভাবে সুন্নাতের ব্যতিক্রম করব বা সুন্নাত বাদ দিয়ে “জায়েয”-কে রীতি ও অভ্যাসে পরিণত করব। সাবধান! সুন্নাত বাদ দিয়ে জাযেযকে ইবাদত বা রীতিতে পরিণত করলে তা বিদ‘আত হয় এবং তাতে সুন্নাতকে অবজ্ঞা করা হয়।
তিনটি কারণে আমরা না বুঝে খেলাফে সুন্নাতকে প্রাধান্য দিয়ে থাকি। প্রথমত, কুরআন-হাদীসের নির্দেশের ভুল ব্যাখ্যা। যেমন, আল্লাহ বলেছেন আল্লাহর নামের যিকর করে কুরবানী করতে, আর আল্লাহর নাম “আল্লাহ”, কাজেই আমি শুধু “আল্লাহ” বলে কুরবানী দেব। আমাদের বুঝতে হবে যে, কুরআনে আল্লাহ যত নির্দেশ দিয়েছেন তা কিভাবে পালন করতে হবে তা শিক্ষা দিয়েছেন রাসূলুল্লাহ সা.। আমাদের দেখতে হবে রাসূলুল্লাহ সা. জবাই বা কুরবানীর সময় কিভাবে আল্লাহর নামের যিক্র করতেন। এভাবে কুরআন ও হাদীসের প্রতিটি নির্দেশই রাসূলুল্লাহ সা.-এর ব্যবহারিক সুন্নাতের আলোকে পালন করতে হবে।
অনুরূপ আরেকটি দলীল হলো রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু” শ্রেষ্ঠ যিকর, কাজেই আমরা কুরবানী বা জবাইয়ের সময় এ বাক্য বলব। এখানেও একই ভুল। ‘আম’ বা ‘সাধারণ’ দলীলকে ‘খাস’ বা নির্দিষ্ট স্থানে লাগালে বিদ‘আত জন্ম নেবে। তিনি যেখানে যে যিকর করেছেন সেখানে সে যিকর করতে হবে। সাধারণ সময়ে সাধারণ ফযীলতের উপর আমল করতে হবে।
বিভ্রান্তির দ্বিতীয় কারণ হলো এক ইবাদতের সুন্নাতকে অন্য ইবাদতে বা অন্য স্থানে দলীল নামে পেশ করা। যেমন, রাসূলুল্লাহ সা. হজ্জের সময় খালি মাথায় নামায পড়েছেন কাজেই আমি সর্বদা খালি মাথায় নামাজ পড়ব। তিনি নফল নামায দাঁড়িয়ে পড়া উত্তম বলেছেন কাজেই নফল কুরআন তিলাওয়াত, বা নফল যিকর, বা নফল দরুদ সালাম পাঠও দাঁড়িযে করা উত্তম। তিনি ওয়াজ বা খুতবা দেওয়ার সময় দাঁড়াতেন, কাজেই ওয়াজ শোনার সময়ও দাঁড়াতে হবে। কেউ আসলে তিনি দাঁড়িয়ে সালাম-মুসাফাহা করতেন, কাজেই আমরা কারো নাম নিতে হলে বা তাঁকে সালাম দিতে হলে দাঁড়িয়ে পড়ব। তিনি রামাদানে বা অন্য সময়ে মাঝে মাঝে জামাতে কিয়ামুল্লাইল বা তাহাজ্জুদ আদায় করেছেন, কাজেই আমরা সর্বদা তা জামাতে আদায় করব। আমাদের বুঝতে হবে যে, সকল ইবাদতই রাসূলুল্লাহ সা. নিজে পালন করেছেন। কাজেই প্রত্যেক ইবাদতই তাঁর হুবহু অনুকরণে পালন করতে হবে। তা না করে যদি এক ইবাদতের দলীল অন্য ইবাদতে পেশ করি তাহলে সুন্নাত নষ্ট হবে এবং বিদআতের জন্ম নেবে। হজ্জের ইহরাম অবস্থায় খালি মাথায় নামায পড়াই সুন্নাত, আর অন্য সময় টুপি-পাগড়ী মাথায় দিয়ে নামায পড়াই সুন্নাত। নফল নামায দাঁড়িয়ে পড়া উত্তম, কারণ তিনি তা শিখিয়েছেন, কিন্তু নফল তিলাওয়াত, যিকর বা দরুদ সালাম দাঁড়িয়ে পড়া উত্তম নয়, কারণ তিনি তা শেখান নি। বরং তিনি এগুলি বসে বসেই করতেন। নফল নামাযের উপর কিয়াস করে নফল তিলাওয়াত, যিক্র বা দরুদ-সালাম দাঁড়িয়ে পড়া উত্তম বলে দাবি করলে রাসূলুল্লাহ সা. ও সাহাবীগণ অনুত্তম কাজ করেছেন বলে দাবি করা হবে। রামাদানে কিয়ামুল্লাইল ও বিতর জামাতে পড়াই সুন্নাত, অন্য সময়ে তা একাকী পড়াই সুন্নাত। রামাদানের উপর কিয়াস করে অন্য সময়ে কিয়ামুল্লাইল বা বিতর জামাতে পড়া উত্তম বললে রাসূলুল্লাহ সা. ও সাহাবীগণ অনুত্তম কাজ করেছেন বলে প্রমাণ করা হয়।
বিভ্রান্তির তৃতীয় কারণ হলো, ফকীহ, আলিম বা বুজুর্গগণের কর্ম বা কথার দলিল দেওয়া। যেমন বলা যে, অমুক বুজুর্গ করেছেন, বা অমুক তমুক কিতাবে লেখা আছে, শুধু “আল্লাহ” বলে কুরবানী করা জায়েয, কাজেই যারা এ কথা মানে না তারা অমুক গোমরাহ দলের লোক! এখানে সমস্যা হলো জায়েয ও সুন্নাতের মধ্যে পার্থক্য না করা। ফকীহদের কথার অর্থ হলো, মাঝে মধ্যে, না জানার কারণে, ভুলে বা অন্য কোনো অসুবিধায় যদি শুধু “আল্লাহ” বা অনুরূপ কোনো শব্দ বলে কেউ জবাই করে তবে তা জায়েয হবে। কিন্তু সুন্নাত জেনেও ইচ্ছাকৃতভাবে এরূপ করার অর্থই হলো, সুন্নাত অপছন্দ করা। কখনোই যুক্তি, তর্ক বা দলীল দিয়ে সুন্নাতের ব্যতিক্রম কোনো কর্ম, কর্মপদ্ধতিকে সুন্নাতের চেয়ে উত্তম বা সুন্নাতের সমপর্যায়ের বলে প্রমাণ করতে চেষ্টা করবেন না। এতে সুন্নাতকে অবজ্ঞা করা হবে, যার পরিণতি ভয়াবহ। প্রত্যেক ইবাদতের ক্ষেত্রে খুটিনাটি সকল বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সা.-এর হুবহু অনুকরণের চেষ্টা করুন।
আমাদের দেশের মুসলিমদের মধ্যে যত দলাদলি মারামারি তার মূল কারণ হলো, ইবাদত বন্দেগি পালনের ক্ষেত্রে সুন্নাতের বিষয়ে গুরুত্ব না দেওয়া। আমরা যদি প্রতিটি ইবাদত পালনের ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ সা. ও সাহাবীগণের পদ্ধতি হুবহু অনুসরণ করতে চেষ্টা করতাম এবং সুন্নাতের অতিরিক্ত কর্ম বা পদ্ধতিকে ইবাদতের অংশ না মনে করতাম তাহলে আমাদের অধিকাংশ বিবাদ নিরসন হতো, আমরা সুন্নাত পালনের অফুরন্ত সাওয়াব পেতাম এবং পারস্পরিক ভালবাসা ও ভ্রাতৃত্বের সাওয়াবও পেতাম। আল্লাহ আমাদেরকে তাওফীক দিন। আমীন।

No comments:

Post a Comment